নেতাজী সুভাষ ফুটবল কোচিং ক্যাম্পের বার্ষিক ফুটবল প্রতিযোগিতা – বর্তমানে মোবাইল ফোনে সীমাবদ্ধ যুব সমাজ। একে তো খেলার উপযুক্ত মাঠ নেই তার উপর পড়াশোনার চাপে ছোটরা খেলার সুযোগ পাচ্ছে না।
মোবাইল ফোনের আশক্তি থেকে দুরে সরিয়ে ছোটো ছোটো ছেলে মেয়েদের মধ্যে ফুটবল খেলার আগ্রহ তৈরি করতে বেহালার নেতাজী সুভাষ ফুটবল কোচিং ক্যাম্পের উদ্যোগে অনুষ্ঠীত হল বার্ষিক ফুটবল প্রতিযোগীতা। যেখানে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও ফুটবল প্রতিযোগীতায় অংশ নেন। খুদে ফুটবলারদের উতসাহ দিতে উপস্থিত ছিলেন তাদের বাবা মায়েরা। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ শুভাশীষ চক্রবর্তী, অধ্যপিকা কেয়া সিনহা, বিশিষ্ট ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাস, অরিন্দম ভট্টাচার্য, ফাল্গুনী দত্ত, মহিলা ফুটবলার আলপনা শিল এবং কুন্তলা ঘোষ দস্তিদার, ফুটবল কোচ সঞ্জয় সেন এবং নিমাই দত্তর মতো ব্যাক্তিত্বরা।

সাংসদ বলেন, গরিব ও পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের ছেলে মেয়েদের খেলাধুলার প্রতি উৎসাহিত করতে এদের উদ্যোগ খুবই ভালো। তিনিও সরকারিভাবে চেষ্টা করছেন যাতে পরিকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের খেলাধুলার সুস্থ পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া যায়।
স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, ‘ভগবদ-গীতা অধ্যয়নের চেয়ে ফুটবল খেলে স্বর্গের কাছাকাছি পৌঁছানো যায়। এই মন্ত্রকে সামনে রেখেই এগিয়ে চলেছে নেতাজি সুভাষ ফুটবল কোচিং ক্যাম্প ।
এটি রাজনৈতিক কোন সংগঠন নয়। ক্লাবটি ফুটবল প্রতিভাবান কম সুবিধাপ্রাপ্ত বাচ্চাদের পাশে আগাগোড়াই থেকে এসেছে। এই বছর স্বাধীনতার ৭৬ বছর পূর্তি উদযাপনের পাশাপাশি বার্ষিক ফুটবল টুর্নামেন্টের অনুষ্ঠান আয়জন করা হয় বেহালার নব তরুন সংঘের মাঠে। ফুটবল কোচিং সেন্টারের পক্ষ থেকে ১০ জন প্রতিভাবান ও কম সুবিধাপ্রাপ্ত বাচ্চাদের হাতে খেলার সরঞ্জাম, পুষ্টিকর খাবার তুলে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আয়োজন করা হয়েছিল বসে আঁকো প্রতিযোগিতা।
শহর জুড়ে ১১০ টিরও বেশি জুনিয়র ফুটবল উতসাহীরা এই টুর্নামেন্টে অংশ নেন। এই ফুটবল ক্লাবটি তাপস ঘোষের মতো প্রশিক্ষিত ফুটবল কোচের দেওয়া প্রশিক্ষনের মধ্য দিয়ে প্রায় ২০ জন সুবিধাবঞ্চিত ছাত্র এবং ছাত্রীদের বিনামূল্যে কোচিং প্রদান করে চলেছে। এই কোচিং সেন্টারে ৬ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের ফুটবল কোচিং দেওয়া হয়। এখানে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও সমান ভাবে ফুটবলের প্রশিক্ষন নেয়। চলতি বছরে এই ক্লাবের ছাত্রীরাই পশ্চিমবঙ্গ সরকার আয়জিত কন্যাশ্রী ফুটবল ম্যাচে সাফল্য পেয়েছে।
নেতাজি সুভাষ ফুটবল কোচিং ক্যাম্পের গেমস সেক্রেটারি বিপ্লব কোনার বলেন, “আমরা ২০২১ সালে কোভিডের পরেই ফুটবল কোচিং সেন্টার শুরু করেছি। এই ক্লাবের প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীকে নিয়মিত প্রশিক্ষণের পর স্বাস্থ্যকর খাবার দেওয়া হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে প্রশিক্ষণার্থীদের পর্যায়ক্রমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। এই কোচিং সেন্টার থেকে খেলোয়াররা বিভিন্ন জায়গায় অংশগ্রহণ করেছে এবং সাফল্য পেয়েছে। এখানকার প্রশিক্ষণার্থীদের দক্ষতা বিকাশের জন্য ১৪টি আন্তঃক্লাব টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
