রাজা পাটের সাফল্য তুলে ধরতে এবার ঢাকে বোল তুললেন পদ্মশ্রী গোকুল ঢাকি

কৃষিকাজ

রাজা পাটের সাফল্য তুলে ধরতে এবার ঢাকে বোল তুললেন পদ্মশ্রী গোকুল ঢাকি – পরিবেশ দুষণ কমাতে সারা বিশ্ব জুড়ে প্লাস্টিকের বদলে পাটের তৈরি জিনিসের ব্যাবহার বাড়ছে দিন দিন। আর এই অতিরিক্ত পাটের অনেকটাই জোগান দিচ্ছে হায়দ্রাবাদের নুজিভীডু সিডস কোম্পানীর রাজা পাট৷ এই পাটের অপ্রত্যাশিত অধিক উৎপাদন চাষিদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।

রাজা পাটের সাফল্য তুলে ধরতে এবার ঢাকে বোল তুললেন পদ্মশ্রী গোকুল ঢাকি
রাজা পাটের সাফল্য তুলে ধরতে এবার ঢাকে বোল তুললেন পদ্মশ্রী গোকুল ঢাকি

গত বছরের তুলনায় এবছর পাটের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। গতবছর যেখানে প্রতি কুইন্টাল পাটের দাম ছিল ৪০০০ টাকা, এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০০০ টাকা প্রতি কুইন্টাল । ফলে রাজা পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে রাজ্যের বহু কৃষকের।

এনজে-৭০০৫, রাজা পাটের এই নতুন প্রজাতিটি ২০২০ সালে উদ্ভাবন করেন নুজিভীডু সিডস সংস্থার গবেষণা বিভাগের প্রধান বিজ্ঞানী ডঃ মোহাম্মদ মসিউর রহমান। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে চাষিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এই উচ্চমানের পাট বীজের জনপ্রিয়তা।

রাজা পাটের আঁশ সাধারণ পাটের তুলনায় অনেক লম্বা ও উন্নত মানের। অন্য প্রজাতির তুলনায় একর প্রতি অন্তত ২ কুইন্টাল বেশি উৎপাদন মেলে। সঙ্গে থাকে কম খরচে চাষ, মোটা ছাল, বেশি লম্বা গাছ (প্রায় ২ ফুট বেশি) ও ভালো মানের আঁশ। যার ফলে চাষিরা একর প্রতি অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভের মুখ দেখছেন।

এই অভাবনীয় সাফল্যে খুশি রাজ্যের চাষিরা। মালদা জেলার তুলসীহাটা, হরিশচন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকে এই সাফল্যে অনুষ্ঠিত হল ‘মেগা ফিল্ড ডে’। সেখানে অংশগ্রহণকারী চাষিদের রাজা পাটের গুণাগুণ তুলে ধরেন বিশেষ অতিথি, ২০২৫ সালে পদ্মশ্রী প্রাপ্ত ঢাকি সম্রাট গোকুল চন্দ্র দাস। ঢাকের তালে তালে কৃষকদের মন ভরিয়ে তিনি জানান, “রাজা পাট শুধু ফসল নয়, চাষিদের ভাগ্যবদলের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত চাষিরা জানান, আগে তারা অন্য প্রজাতির পাট চাষ করতেন। কিন্তু ফলন ও লাভের পরিমাণ ছিল অনেকটাই কম। রাজা পাট চাষ শুরুর পর থেকে তাদের আর্থিক অবস্থা অনেকটাই উন্নত হয়েছে। কেউ কেউ জানিয়েছেন,আগের থেকে অনেক বেশি আয় হচ্ছে এখন চাষীদের এই পাট চাষ করে।

নুজিভীডু সিডস সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, রাজা পাট ভবিষ্যতের জন্য একটি টেকসই ও লাভজনক সমাধান। বর্তমানে ভারতে যে ধরনের পাট চাষ হয়, তার আঁশের গুণমান বাংলাদেশের তুলনায় কম। ফলে শিল্পক্ষেত্রে সমস্যা হয়। কিন্তু রাজা এনজে-৭০০৫ সেই সমস্যা দূর করতে সক্ষম বলে দাবি গবেষকদের।

এখনও যারা রাজা পাট চাষ শুরু করেননি, তারা বাজারের চড়া দামের খবর শুনে ও প্রতিবেশী চাষিদের সাফল্য দেখে আগ্রহী হচ্ছেন। অনেকেই জানিয়েছেন, আগামী মরসুমে তাঁরা নিশ্চিতভাবে এই বীজ দিয়ে চাষ করবেন।

অর্থাৎ রাজা পাট এখন শুধু একটি বীজ নয়, গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত শক্ত করার অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠছে। দাম, মান, ফলন তিন দিক থেকেই কৃষকদের জন্য সেরা পছন্দ হয়ে উঠেছে এই নতুন প্রজাতির পাট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *